সভাপতির বানী

গোপালপুর হামিদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি হিসেবে আমি এ প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত হতে পেরে নিজেকে অত্যন্ত গর্বিত মনে করি। ১৯৬৪ সালে বিদ্যালয়ের যাত্রা শুরুর পর থেকে এটি কেবল একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবেই নয়, বরং এ অঞ্চলের মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতীক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এক সময় যখন এ অঞ্চলে শিক্ষার আলো সঠিকভাবে পৌঁছায়নি, তখন অল্প কিছু শিক্ষানুরাগী মানুষ এবং দানশীল ব্যক্তিবর্গের প্রচেষ্টা ও ত্যাগের বিনিময়ে গোপালপুর হামিদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের জন্ম হয়। তাদের সেই মহৎ উদ্যোগ আজ হাজারো শিক্ষার্থীর জীবনে জ্ঞানের আলো জ্বেলে চলেছে। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই বিদ্যালয়টি সুসংগঠিত পাঠদান, শৃঙ্খলাপূর্ণ পরিবেশ ও শিক্ষার্থীবান্ধব কার্যক্রমের মাধ্যমে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের আস্থা অর্জন করেছে। এখানে কেবল পাঠ্যপুস্তকনির্ভর শিক্ষা দেওয়া হয় না; বরং শিক্ষার্থীদের নৈতিকতা, দেশপ্রেম, দায়িত্ববোধ ও নেতৃত্বগুণ গড়ে তোলার উপরও সমান গুরুত্ব দেওয়া হয়। আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষাব্যবস্থা, ক্রীড়া, সাংস্কৃতিক কার্যক্রম, বিজ্ঞানচর্চা, বিতর্ক ও সামাজিক উন্নয়নমূলক কাজে শিক্ষার্থীদের সম্পৃক্ত করার মাধ্যমে তাদের পূর্ণাঙ্গ মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার প্রয়াস অব্যাহত রয়েছে। আমাদের লক্ষ্য হলো প্রতিটি শিক্ষার্থীকে এমনভাবে তৈরি করা, যাতে তারা কেবল পরীক্ষার ফলাফলে নয়, বরং বাস্তব জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে সফলতার স্বাক্ষর রাখতে পারে। বর্তমান বিশ্ব প্রতিযোগিতামূলক—তথ্যপ্রযুক্তি ও আধুনিক বিজ্ঞানের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হলে শিক্ষার্থীদেরকে দক্ষ, আত্মনির্ভরশীল ও সৃজনশীল হতে হবে। এজন্য আমরা বিদ্যালয়ে আধুনিক শ্রেণিকক্ষ, ল্যাবরেটরি, লাইব্রেরি এবং আইসিটি সুবিধা উন্নয়নের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। গোপালপুর হামিদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাই আমাদের সবচেয়ে বড় শক্তি। তারা আগামী দিনের ভবিষ্যৎ, তারা আমাদের জাতির মূল চালিকা শক্তি। আমি বিশ্বাস করি, এই বিদ্যালয়ের প্রতিটি শিক্ষার্থী সৎ, মেধাবী ও দেশপ্রেমিক নাগরিক হয়ে সমাজ ও জাতির কল্যাণে অবদান রাখবে। এ পথে তাদের প্রতিটি পদক্ষেপে আমরা পাশে আছি। আমি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই বিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দকে, যাদের নিরলস পরিশ্রম ও দায়িত্বশীলতা এ প্রতিষ্ঠানের সাফল্যের মূল ভিত্তি। পাশাপাশি অভিভাবক ও স্থানীয় জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই, যাদের সহযোগিতা ছাড়া এতদূর এগিয়ে আসা সম্ভব হতো না। এ প্রতিষ্ঠানের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরাও বিভিন্ন পেশায় কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখে বিদ্যালয়ের মর্যাদা বাড়িয়ে চলেছেন, যা আমাদের গর্বিত করে। প্রিয় শিক্ষার্থীরা, তোমাদের জন্যই এ প্রতিষ্ঠান, তোমাদের হাত ধরেই এগিয়ে যাবে এই বিদ্যালয়ের ইতিহাস। কঠোর পরিশ্রম, সততা, শৃঙ্খলা ও মানবিক গুণাবলী ধারণ করে তোমাদেরকে নিজেদের স্বপ্ন পূরণের পাশাপাশি দেশ ও জাতির সেবায় আত্মনিয়োগ করতে হবে। মনে রেখো, শিক্ষা শুধু জীবিকা অর্জনের মাধ্যম নয়; বরং সৎ ও আদর্শ জীবন গঠনের অন্যতম হাতিয়ার। পরিশেষে, আমি সকলের কাছে দোয়া ও সহযোগিতা কামনা করছি, যেন গোপালপুর হামিদিয়া উচ্চ বিদ্যালয় শিক্ষার আলোকবর্তিকা হয়ে আগামী প্রজন্মকে আলোকিত করে গড়ে তুলতে পারে। আসুন আমরা সবাই মিলে এ প্রতিষ্ঠানকে আরও সমৃদ্ধ, আধুনিক ও বিশ্বমানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরিণত করি। — সভাপতি গোপালপুর হামিদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়